৪ঠা অক্টোবর
তাদের দু জনের প্রথম দেখা হল।
তখন বিকেল ঘনিয়ে আসছে, বাতাসে শীতের আমেজ।
১০ই অক্টোবর
তাদের দীর্ঘক্ষণ কথা হল টেলিফোনে।
সেইদিন ছেলেটি নতুন কেনা টবে গোলাপের চারা লাগালো।
৩০ই অক্টোবর
রেষ্টুরেন্টের নিরালা কেবিনে ছেলেটি বলল “ তোমাকে আমি ভালবাসি”
মেয়েটি লজ্জায় মাথা নিচু করে টেবিলে আঁকি-বুকি কাটলো।
১২ই ডিসেম্বর
গোলাপ গাছে কুড়ি ধরল
রেষ্টুরেন্টে মেয়েটি জিজ্ঞাস করল
-কেন ভালবাস আমায়? আমি সুন্দরী তাই?
-তোমার চেয়ে সুন্দরী আছে কতো
-আমার বাবার প্রচুর অর্থ তাই?
-তোমার বাবার চেয়ে বড়লোক এখানে কম আছে?
-তাহলে?
-ভালবাসি, ভালবাসি তার আবার কারণ হয় নাকি ?
মেয়েটি বাড়ি ফিরে টেলিফোনে বন্ধুদের সাথে অনেক আলোচনা করল,
সবায় এক বাক্যে বুঝিয়ে দিল , ভালো যখন বাসে তখন একটা কিছু কারন আছে বটেই।
সেটা না বুঝে বেশি এগোস না।
১৩ই জানুয়ারি
মেয়েটি বলল
-আমার কাছে কি চাও ?
-কই চাই নি তো কিছু …
-ভালবাসো অথচ চাও না…. তাহলে?
-“না চাহিলে যারে পাওয়া যায়…”
-এতো গান!
-শুধুই গান?
-তাছাড়া কি?কিছুই যদি না চাও তাহলে ভালবাসো কেন?
-ভালবাসি তাই ভালবাসা দিতে চাই… চাইবো কেন ?
-তুমি সত্যিই অদ্ভুত।
১০ই ফেব্রুয়ারী দুজনের দেখা হলো মেট্রো ষ্টেশনে পাতালে
ছেলেটি বললো, আমি কাল সারারাত বাশি বাজিয়েছি।
সারারাত সে মায়াবী আলোয় তুমি নাচছিলে। অসাধারন, অনন্য সে নাচ।
-ধ্যাত, কাল সারারাত আমি ঘুমিয়েছি।
-আমি কিন্তু তোমার নাচই দেখে গেছি সারারাত।
-তোমার বাঁশি একদিন শুনতে হবে।
১২ই মার্চ ছেলেটি বাঁশি বাজালো, মেয়েটি শুনলো,
সময় থমকে গেল অনেক্ষন।
বাঁশি যখন থামলো, মেয়েটির দুচোখ ভরা জলে।
বললো, বাঁশি শুনতে শুনতে আমার ঘুম এলো আবেশে।
আমি দেখলাম আমি নাচছি, মেঘের মাঝখানে, তারাদের পাশে আমি নাচছি।
আকাশে ফুলের গন্ধ।
- ডাক্তার আমাকে বাঁশি বাজাতে নিষেধ করেছে।
-সেকি! কেন?
-বাঁশি আমায় টেনে নিয়ে যায় স্বপ্নে,
ডাক্তার বলেছে, স্বপ্ন দেখে দেখে আমার মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরায় জট পাকিয়ে যাচ্ছে।
১৬ই এপ্রিল মেয়েটি বললো,
-আমার বন্ধুরা বলেছে তুমি খুব ভালো, অসাধারন। কিন্তু তুমি সৃষ্টিছাড়া, তোমার স্বপ্ন সব অর্থহীন।
-আমি জানি।
-স্বপ্ন-টপ্ন ছেড়ে দিতে পারো না তুমি?
-তাহলে? তাহলে তো তুমি আমাকে হারাবে।
-তোমায় পাইনি তো কখনো
৫ই মে ছেলেটির মস্তিষ্কে অপারেশন হলো। একটু সুস্থ হতেই মেয়েটি এসে বললো,
- ভালো আছো তো? এখন আর এসব স্বপ্ন দেখছো না তো?
-দেখছি। আরো সুন্দর সব স্বপ্ন দেখছি।
-তাহলে তো দেখছি অপারেশনটি আদৌ সফল হয় নি।
বাড়ি ফিরে বন্ধুদের ফোন করলো মেয়েটি।
বন্ধুরা একবাক্যে বললো, বাঁশি বাজানো, স্বপ্ন দেখা, সব ব্যাকডেটেড, সৃষ্টিছাড়া।
তুই আর লোক পেলি না?
তুই এতো রুপসী, তোর এতো উজ্জ্বল প্রস্পেক্ট,
ভালো যদি চাস, তাহলে শিজ্ঞির বিয়ে করে ফেল তোর দাদার সে বন্ধুকে।
শুনেছি তিনি নাকি কানাডাতেই স্যাটেল করবেন।
৭ই জুলাই মেয়েটি আবার জিজ্ঞেস করলো,
-তুমি সত্যি ই চাও বলতো?
-তুমি আরো সার্থক, আরো সুন্দর হয়ে ওঠো।
-ব্যস? আর কিছু না?
-আর?? আর চাই স্বপ্ন দেখতে।
-ও! স্বপ্ন তাহলে তুমি ছাড়তে পারবে না?
-তাহলে থাকো তুমি তোমার স্বপ্ন নিয়ে
১২ই অগাস্ট, গোলাপ গাছে ফুল ফুটলো অনেক।
সেদিন দুপুরে ছেলেটির মস্তিষ্কে আবার অপারেশন হলো।
১৩ই সেপ্টেম্বর ছেলেটি মারা গেলো।
১৪ই সেপ্টেম্বর, মেয়েটির শুভ বিবাহ সুসম্পন্ন হলো কানাডাগামী সেই পাত্রের সাথে।
২০ই সেপ্টেম্বর গোলাপ গাছটি হঠাৎ ঝড়ে উপড়ে গেল।
সেদিন সন্ধ্যের বিমানে মেয়েটি হানিমুনে গেল।
যাবার আগে বন্ধুদের বলে গেল,
স্বপ্নের চেয়ে বাস্তব অনেক ভালো রে, অনেক মধুর। স্বপ্ন দেখে কেবল বোকারা।
৪ঠা অক্টোবর,
ছেলেটির মা ঝড়ে পড়া গোলাপ গাছটিকে সযত্নে উপড়ে ফেলে দিলো।
শূন্য টবে তখন কয়েকটি পোকা আর কয়েকটি মাছি।
আমি ঠিক জানি না ওগুলো পোকা-মাছি, নাকি ছেলেটির স্বপ্ন।
আমি ঠিক জানি না......... আমি ঠিক জানি না.........।
এটি আমার লেখা কবিতা নয়। অডিও ফাইল আছে এটির আমার কাছে। কেউ যদি এই কবিতার লেখকের নাম বলেন, তাহলে বেশ উপকৃত হতাম। এই কবিতার ব্যপারে আমি একটি কথাই বলতে পারি। আমি যদি এই কবিতার স্রষ্টা হতাম, তবে এটি লিখেই আত্মহত্যা করতাম। আমি জানি না আমার সহ্য ক্ষমতা কতোটুকু। আমি সত্যি জানি না ওই মাছি-পোকাগুলো ছেলেটির স্বপ্ন ছিলো নাকি। আমি সত্যি জানি না।
তাদের দু জনের প্রথম দেখা হল।
তখন বিকেল ঘনিয়ে আসছে, বাতাসে শীতের আমেজ।
১০ই অক্টোবর
তাদের দীর্ঘক্ষণ কথা হল টেলিফোনে।
সেইদিন ছেলেটি নতুন কেনা টবে গোলাপের চারা লাগালো।
৩০ই অক্টোবর
রেষ্টুরেন্টের নিরালা কেবিনে ছেলেটি বলল “ তোমাকে আমি ভালবাসি”
মেয়েটি লজ্জায় মাথা নিচু করে টেবিলে আঁকি-বুকি কাটলো।
১২ই ডিসেম্বর
গোলাপ গাছে কুড়ি ধরল
রেষ্টুরেন্টে মেয়েটি জিজ্ঞাস করল
-কেন ভালবাস আমায়? আমি সুন্দরী তাই?
-তোমার চেয়ে সুন্দরী আছে কতো
-আমার বাবার প্রচুর অর্থ তাই?
-তোমার বাবার চেয়ে বড়লোক এখানে কম আছে?
-তাহলে?
-ভালবাসি, ভালবাসি তার আবার কারণ হয় নাকি ?
মেয়েটি বাড়ি ফিরে টেলিফোনে বন্ধুদের সাথে অনেক আলোচনা করল,
সবায় এক বাক্যে বুঝিয়ে দিল , ভালো যখন বাসে তখন একটা কিছু কারন আছে বটেই।
সেটা না বুঝে বেশি এগোস না।
১৩ই জানুয়ারি
মেয়েটি বলল
-আমার কাছে কি চাও ?
-কই চাই নি তো কিছু …
-ভালবাসো অথচ চাও না…. তাহলে?
-“না চাহিলে যারে পাওয়া যায়…”
-এতো গান!
-শুধুই গান?
-তাছাড়া কি?কিছুই যদি না চাও তাহলে ভালবাসো কেন?
-ভালবাসি তাই ভালবাসা দিতে চাই… চাইবো কেন ?
-তুমি সত্যিই অদ্ভুত।
১০ই ফেব্রুয়ারী দুজনের দেখা হলো মেট্রো ষ্টেশনে পাতালে
ছেলেটি বললো, আমি কাল সারারাত বাশি বাজিয়েছি।
সারারাত সে মায়াবী আলোয় তুমি নাচছিলে। অসাধারন, অনন্য সে নাচ।
-ধ্যাত, কাল সারারাত আমি ঘুমিয়েছি।
-আমি কিন্তু তোমার নাচই দেখে গেছি সারারাত।
-তোমার বাঁশি একদিন শুনতে হবে।
১২ই মার্চ ছেলেটি বাঁশি বাজালো, মেয়েটি শুনলো,
সময় থমকে গেল অনেক্ষন।
বাঁশি যখন থামলো, মেয়েটির দুচোখ ভরা জলে।
বললো, বাঁশি শুনতে শুনতে আমার ঘুম এলো আবেশে।
আমি দেখলাম আমি নাচছি, মেঘের মাঝখানে, তারাদের পাশে আমি নাচছি।
আকাশে ফুলের গন্ধ।
- ডাক্তার আমাকে বাঁশি বাজাতে নিষেধ করেছে।
-সেকি! কেন?
-বাঁশি আমায় টেনে নিয়ে যায় স্বপ্নে,
ডাক্তার বলেছে, স্বপ্ন দেখে দেখে আমার মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরায় জট পাকিয়ে যাচ্ছে।
১৬ই এপ্রিল মেয়েটি বললো,
-আমার বন্ধুরা বলেছে তুমি খুব ভালো, অসাধারন। কিন্তু তুমি সৃষ্টিছাড়া, তোমার স্বপ্ন সব অর্থহীন।
-আমি জানি।
-স্বপ্ন-টপ্ন ছেড়ে দিতে পারো না তুমি?
-তাহলে? তাহলে তো তুমি আমাকে হারাবে।
-তোমায় পাইনি তো কখনো
৫ই মে ছেলেটির মস্তিষ্কে অপারেশন হলো। একটু সুস্থ হতেই মেয়েটি এসে বললো,
- ভালো আছো তো? এখন আর এসব স্বপ্ন দেখছো না তো?
-দেখছি। আরো সুন্দর সব স্বপ্ন দেখছি।
-তাহলে তো দেখছি অপারেশনটি আদৌ সফল হয় নি।
বাড়ি ফিরে বন্ধুদের ফোন করলো মেয়েটি।
বন্ধুরা একবাক্যে বললো, বাঁশি বাজানো, স্বপ্ন দেখা, সব ব্যাকডেটেড, সৃষ্টিছাড়া।
তুই আর লোক পেলি না?
তুই এতো রুপসী, তোর এতো উজ্জ্বল প্রস্পেক্ট,
ভালো যদি চাস, তাহলে শিজ্ঞির বিয়ে করে ফেল তোর দাদার সে বন্ধুকে।
শুনেছি তিনি নাকি কানাডাতেই স্যাটেল করবেন।
৭ই জুলাই মেয়েটি আবার জিজ্ঞেস করলো,
-তুমি সত্যি ই চাও বলতো?
-তুমি আরো সার্থক, আরো সুন্দর হয়ে ওঠো।
-ব্যস? আর কিছু না?
-আর?? আর চাই স্বপ্ন দেখতে।
-ও! স্বপ্ন তাহলে তুমি ছাড়তে পারবে না?
-তাহলে থাকো তুমি তোমার স্বপ্ন নিয়ে
১২ই অগাস্ট, গোলাপ গাছে ফুল ফুটলো অনেক।
সেদিন দুপুরে ছেলেটির মস্তিষ্কে আবার অপারেশন হলো।
১৩ই সেপ্টেম্বর ছেলেটি মারা গেলো।
১৪ই সেপ্টেম্বর, মেয়েটির শুভ বিবাহ সুসম্পন্ন হলো কানাডাগামী সেই পাত্রের সাথে।
২০ই সেপ্টেম্বর গোলাপ গাছটি হঠাৎ ঝড়ে উপড়ে গেল।
সেদিন সন্ধ্যের বিমানে মেয়েটি হানিমুনে গেল।
যাবার আগে বন্ধুদের বলে গেল,
স্বপ্নের চেয়ে বাস্তব অনেক ভালো রে, অনেক মধুর। স্বপ্ন দেখে কেবল বোকারা।
৪ঠা অক্টোবর,
ছেলেটির মা ঝড়ে পড়া গোলাপ গাছটিকে সযত্নে উপড়ে ফেলে দিলো।
শূন্য টবে তখন কয়েকটি পোকা আর কয়েকটি মাছি।
আমি ঠিক জানি না ওগুলো পোকা-মাছি, নাকি ছেলেটির স্বপ্ন।
আমি ঠিক জানি না......... আমি ঠিক জানি না.........।
এটি আমার লেখা কবিতা নয়। অডিও ফাইল আছে এটির আমার কাছে। কেউ যদি এই কবিতার লেখকের নাম বলেন, তাহলে বেশ উপকৃত হতাম। এই কবিতার ব্যপারে আমি একটি কথাই বলতে পারি। আমি যদি এই কবিতার স্রষ্টা হতাম, তবে এটি লিখেই আত্মহত্যা করতাম। আমি জানি না আমার সহ্য ক্ষমতা কতোটুকু। আমি সত্যি জানি না ওই মাছি-পোকাগুলো ছেলেটির স্বপ্ন ছিলো নাকি। আমি সত্যি জানি না।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন